প্রত্যয় নিউজ ডেস্কঃ করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) কারণে বিশ্বের অনেক দেশের মতো ভারতেও সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কয়েক মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। অবশ্য শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কোথাও কোথাও অনলাইনে ক্লাস চলছে। তবে, সবার এতে অংশ নেয়ার সক্ষমতা নেই। ফলে এক শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এতে ডিজিটাল ডিভাইনের মধ্যে পড়ছেন।
এরকম পরিস্থিতিতে ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের বুদগাম জেলার দুধপাত্রি শহরের একদল শিক্ষার্থী একটি ‘অনবদ্য’ এক সমাধান নিয়ে হাজির হয়েছে। তারা পাহাড়ের চূড়ার উন্মুক্ত প্রান্তরকেই নতুন শ্রেণীকক্ষ বানিয়ে নিয়েছে। রোববার (২ আগস্ট) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, লকডাউনের কারণে বন্ধ হওয়া স্কুলের শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন সকালে জলস্রোত আর সেতু পেরিয়ে পাহাড়ের ওপর তাদের ‘ক্লাসরুমে’ হাজির হয়। ছবির মতো সুন্দর তাদের শ্রেণীকক্ষের পেছনে থাকে বরফাচ্ছন্ন হিমালয় পর্বতমালা।
খোলা আকাশের নিচে ক্লাস শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অভিভাবকদেরও প্রাণভরে নিঃশ্বাস নেয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। কারণ তারা করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে কয়েক মাস ধরে বাড়ির বাইরে যেতে না।
জানা যায়, এ পর্যন্ত কাশ্মীরে ১৯ হাজারের বেশি মানুষের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আর কমপক্ষে ৩৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
খোলা আকাশের নিচে ক্লাসের ব্যাপারে মুশতাক আহমেদ নামে এক অভিভাবক বলেন, ‘বাসায় থাকতে থাকতে ছেলে-মেয়েরা বিরক্ত হয়ে যাচ্ছিল। তাই এ ধরনের স্কুল আমাদের শিশুদের জন্য অনেক ভালো। কর্মকর্তাদের উচিত স্থানীয়দের সহযোগিতায় এ ধরনের আরও স্কুল বানানো।’
আঞ্চলিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রমজান ওয়ানি বলেন, ‘সুরক্ষা ব্যবস্থার কথা মাথায় রেখেই পাঠদান করা হচ্ছে। অনিশ্চিত আবহাওয়ার কারণে আমরা তাঁবু টানানোরও চেষ্টা করছি, যেন নিরবচ্ছিন্নভাবে ক্লাস নেয়া যায়।’
এদিকে, সব শিক্ষার্থীর সমান ডিজিটাল সক্ষমতা না থাকায় এক ধরনের শ্রেণি বিভাজন তৈরি হচ্ছে। লকডাউনের মধ্যে ভারতের বিভিন্ন স্কুল অনলাইনে পাঠদানের চেষ্টা করলেও দুর্গম এলাকায় দ্রুতগতির ইন্টারনেটের অভাব এবং অনেক শিক্ষার্থীর স্মার্টফোন না থাকার কারণে বিকল্প এ পদ্ধতি কার্যকর হয়ে উঠছে না।
ফলে কাশ্মীরের দুধপাত্রির এ খোলা আকাশের নিচে স্কুলের ধারণাকে অনেকেই স্বাগত জানাচ্ছেন।
ডিপিআর/ জাহিরুল মিলন